সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : এসে গেল শীত। শীতের হিমহিম ছোঁয়া শরীরের জন্য আরামদায়ক হলেও ত্বকের জন্য নয়। কারণ- এই সময় ত্বকের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং। এ সময় ত্বকে দেখা দেয় শুষ্কতা, যা ঠিকমতো যত্ন না নিলে আরও খারাপ অবস্থার দিকে যেতে পারে। শীতের শুরুর দিন থেকেই নিয়মিত ত্বকের পরিচর্যা ও জীবনযাত্রায় খানিকটা পরিবর্তনে ত্বক হবে সতেজ ও প্রাণবন্ত। মানুষের ত্বক সাধারণত তিন ধরনের- তৈলাক্ত, শুষ্ক ও মিশ্র। তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীরা শীতে অতিরিক্ত তেল থেকে বাঁচলেও মুখ ধোয়ার পরপরই ত্বকে দেখা যায় শুষ্ক টানটান ভাব।
শীতে ত্বকের সাধারণ সমস্যা
* ত্বকে শুষ্কতা ও মলিনতা দেখা দেয়।
* মুখ ধোয়ার পর ত্বকে টানটান অনুভূতি হয়।
* চুলকানি হতে পারে।
* বলিরেখা ও ত্বকের রেখা আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
* ত্বক লালচে এবং সাদাটে হয়ে যেতে পারে।
* মৃত কোষ জমে ত্বক প্রাণহীন দেখায়।
এ ধরনের সমস্যা এড়াতে নিয়মিত পরিচর্যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিচ্ছন্নতা বজায় এবং সঠিক পদ্ধতি অনুসরণে শীতেও ত্বক থাকবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।
ত্বক সতেজ রাখতে যা করবেন
* সকালে ঘুম থেকে উঠে ত্বকের ধরন অনুযায়ী ফেসওয়াশ বা ময়েশ্চারযুক্ত সাবান দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন। প্রতি দুই দিন অন্তর একটি স্ক্রাব ব্যবহার করতে পারেন, যা ত্বকের মৃত কোষ সরিয়ে উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে। চাইলে গাজরের রস মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বক পরিষ্কার করার পাশাপাশি কালো ছোপ কমাতে সাহায্য করবে।
* শীতে গোসলের জন্য আর্দ্রতাযুক্ত সাবান ব্যবহার করা উচিত। ত্বকে খসখসে ভাব কমাতে সরিষার তেল, নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে, এগুলো ব্যবহারের আগে নিশ্চিত হয়ে নিন তেলটি আপনার ত্বকের জন্য উপযুক্ত কি না। গোসলের পর ত্বক ভেজা অবস্থায় সঙ্গে সঙ্গে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
* বাইরে বের হওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা জরুরি। শীতের রোদ উপভোগ্য হলেও তা ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। এসপিএফ ১৫-৩০ সম্পন্ন সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
* রাতে ঘুমানোর আগে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে ত্বকের শুষ্ক ভাব দূর হয়। যাদের বয়স কম, তারা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করতে পারেন। বয়স ৩০ পেরোলে নাইট ক্রিম ব্যবহার করুন।
শীতকাল এলে যেমন আমাদের ত্বকের পরিচর্যা এবং ফ্যাশনে আসে পরিবর্তন, তেমনই খাদ্যাভ্যাসেও আনা উচিত কিছু পরিবর্তন। যা শরীরকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি বৈরী আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেবে।
* শীতে সূর্যের আলো কম পাওয়ার কারণে শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এই ঘাটতি পূরণে ডায়েটে রাখতে পারেন ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার। মাশরুম, ডিম, দুধ ও দুধ থেকে তৈরি বিভিন্ন খাবার যেমন পনির, ছানা এবং রেড মিট খেলে এই ঘাটতি অনেকটাই পূরণ করা সম্ভব।
* শীতের খাদ্য তালিকায় বিটরুট, গাজর, মুলার মতো মূলযুক্ত সবজি রাখতে ভুলবেন না। এসব সবজিতে প্রচুর ভিটামিন এ, সি এবং বিটা-ক্যারোটিন রয়েছে। এগুলো স্যালাড, স্যুপ, বা রান্না করে খেলে শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয়।
* শীতে শরীরকে উষ্ণ রাখতে আর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে খেজুর, শুকনো অ্যাপ্রিকট, আমন্ড, আখরোট, আর পেস্তার মতো শুকনো ফল খাওয়া যেতে পারে। এই খাবারগুলোতে রয়েছে প্রচুর ফাইবার, ভিটামিন এবং ক্যালসিয়ামসহ প্রয়োজনীয় মিনারেল, যা শীতকালে শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
* শীতকালে বেশি বেশি গ্রিন-টি পান করতে পারেন। কেননা, অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের জন্য স্বাস্থ্যকর পানীয়গুলোর মধ্যে গ্রিন টি সেরা হিসেবে বিবেচিত হয়। যা শরীরের কোষকে হাইড্রেটেড রাখে।
* আদা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এটি শীতকালে অ্যালার্জি থেকে রক্ষা করে এবং ওজন কমাতেও সাহায্য করে। তাই শীতকালে আদা চা পান করা প্রয়োজন। এ ছাড়া আদা শরীর ডিটক্সিফাই করে এবং উষ্ণতা প্রদান করে থাকে।